হংকং, সিঙ্গাপুরের মতো নেপালের বিপক্ষেও বাংলাদেশের একই কাহিনি। ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে গোল হজম করে পয়েন্ট খোয়ানো। হামজার অসাধারণ পারফরম্যান্সের পরও নেপালের মতো প্রতিপক্ষের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র হওয়ায় ফুটবলাঙ্গনে চলছে চরম হতাশা ও সমালোচনা। বরাবরের মতো কাঠগড়ায় স্পেনিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা, এবার তার সঙ্গে যোগ হয়েছেন গোলরক্ষক মিতুল মারমা।
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা হতাশ কন্ঠে বলেন, ‘হামজার অতিমানবীয় গোলের পরও জয় না নিয়ে মাঠ ছাড়া খুব হতাশার। এজন্য রক্ষণ ও গোলরক্ষককদে দায় নিতেই হবে। গত কয়েকটি ম্যাচেই দেখা যাচ্ছে গোলরক্ষক ও রক্ষণের মধ্যে গ্যাপ ও সমন্বয়হীনতা। ভাইয়ের মৃত্যুর পর মিতুল স্বাভাবিক ছন্দে নেই। কোচের এই পজিশন নিয়ে অবশ্যই গভীরভাবে ভাবা উচিত।’
হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা তিন বছরের বেশি সময় বাংলাদেশে কাজ করছেন। এরপরও একাদশ ঠিক মতো গড়তে পারেন না। তাই ভারত ম্যাচের আগে খানিকটা শঙ্কিত রানা, ‘নেপাল দুর্বল প্রতিপক্ষ এরপরও ততোধিক ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার ছিল একাদশে। দলে স্ট্রাইকার রয়েছে এরপরও তিনি নেপালের বিপক্ষে মেক শিফট রাকিবকে খেলান। তাহলে স্ট্রাইকার নিয়ে লাভ কি দলে যদি নেপালের বিপক্ষে না খেলান? ফাহিম দ্বিতীয়ার্ধে নিজের পজিশনে খেলার পরই বাংলাদেশের খেলায় পরিবর্তন এসেছে। প্রথমার্ধে কেন তাকে ভিন্ন পজিশনে খেলাল সেটা বোধগম্য নয়। একাদশ ঠিক না হলে ভারত ম্যাচে ভালো কিছু সম্ভব নয়।’
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও গোলরক্ষক বিপ্লব ভট্টাচার্য কালকের হারে বেশ ব্যথিত। শেষ মুহূর্তে পয়েন্ট খোয়ানো রক্ষার্থে তিনি মেডিটেশনের দাবি করলেন, ‘ফুটবলাররা শেষের দিকে মনোযোগ হারিয়ে ফেলছে। এজন্য তাদের মেডিটেশন প্রয়োজন। গোলরক্ষক মিতুল ও রক্ষণের ভুল রয়েছে। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।’
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের গত মৌসুমে প্রথম লেগে মিতুল প্রায় ৯০০ মিনিট আবাহনীর হয়ে গোলশূন্য ছিলেন। সিঙ্গাপুর ম্যাচের পর থেকে যেন আগের মিতুল নেই। চার ম্যাচে হজম করেছেন ৯ গোল। এতে প্রশ্ন উঠেছে গোলরক্ষক কোচের দক্ষতা ও যোগ্যতা নিয়ে। পাশাপাশি দ্বিতীয় গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণকে না খেলানো নিয়ে। যিনি এএফসি অ-২৩ টুর্নামেন্টে অসাধারণ খেলেছেন এবং বসুন্ধরা কিংসের প্রধান গোলরক্ষক।
সাবেক জাতীয় ফুটবলার ও দেশের অন্যতম ফুটবল বিশ্লেষক জুলফিকার মাহমুদ মিন্টু। তিনি বাংলাদেশের ফুটবলের ফলাফল ও পারফরম্যান্স নিয়ে যারপরনাই বিরক্ত হয়ে বলেন, ‘প্রতি ম্যাচেই একই ধরনের পুনরাবৃত্তি। ফুটবলার,কোচ এবং ফেডারেশন কোনো পক্ষই নিজেদের সংশোধন বা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয় না। এ নিয়ে আর কিছু বলার নেই।’
নেপালে ঘরোয়া ফুটবল নেই দুই বছরের বেশি সময়। জাতীয় দলের অস্ট্রেলিয়ান কোচ পদত্যাগ করেছেন। সাবেক খেলোয়াড় ও কোচ হড়ি খাড়কা স্বল্প প্রস্তুতিতে বাংলাদেশে দল নিয়ে আসেন। হামজা-সামিতের মতো ফুটবলার থাকার পরও বাংলাদেশের মাটি থেকে এক পয়েন্ট নিয়ে যাচ্ছেন। যা হড়ি খাড়কার সাফল্যই।
বাংলাদেশের কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা নেপালের বিপক্ষে খেলার আগে ক্লোজড ডোর অনুশীলন করান। মিডিয়াকে অবরুদ্ধ রাখলেও তিনি বাংলাদেশের ক্লাবে খেলা নেপালী ফুটবলার অনন্ত তামাংয়ের বিপক্ষে অনুশীলন ম্যাচ খেলেন ৷ সেই অনন্ত গতকাল শেষ মুহূর্তে গোল করে বাংলাদেশের জয় হরণ করেছে।
অনলাইন ডেক্স 























