অ্যান্টিক কয়েন ব্যবসার নামে অভিনব প্রতারণার মাধ্যমে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া একটি সংঘবদ্ধ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির আদাবর থানা পুলিশ। প্রতারকদের কাছ থেকে নগদ ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৫০ লাখ টাকার ব্যাংক চেক, চারটি ভুয়া ‘অ্যান্টিক মেটাল কয়েন’ এবং প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ১০টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা কারা?
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতরা হলো—
১. ইফতেখার আহম্মেদ (৪৪)
2. আবু নাঈম মো. ফাইজানুল হক ওরফে ডক্টর নাঈম (৪৮)
3. মো. আব্দুল হালিম তালুকদার কুরাইশি (৪২)
4. আবুল কালাম আজাদ (৪৬)
প্রতারণার অভিনব কৌশল
প্রায় আট মাস আগে প্রতারক চক্রের মূল হোতা ইফতেখার আহম্মেদ এক ব্যবসায়ী মিজানুর রহমানের সঙ্গে পরিচিত হন। এরপর তিনি ‘অ্যান্টিক মেটাল কয়েন’ ব্যবসার নামে বিনিয়োগের প্রলোভন দেখান। তিনি দাবি করেন, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এই কয়েনগুলো বিপুল মূল্যে কিনে নেয় এবং এতে বিনিয়োগ করলে নিশ্চিত লাভ পাওয়া যাবে।
চক্রটি গত ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সালে গুলশানের একটি হোটেলে মিজানুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করে। সেখানে আবু নাঈম মো. ফাইজানুল হক নিজেকে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দেন এবং মো. আব্দুল হালিম তালুকদার কুরাইশিকে বিশেষজ্ঞ বা কেমিস্ট হিসেবে উপস্থাপন করা হয়।
তারা কয়েনগুলোর মূল্য ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বলে দাবি করে এবং ভুয়া ল্যাব পরীক্ষার মাধ্যমে কয়েনগুলোর প্রামাণ্যতা নিশ্চিত করে। এই প্রতারণার ফাঁদে পড়ে মিজানুর রহমান গত ২৭ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে প্রথমে ৪৫ লাখ টাকা দেন। পরে ধাপে ধাপে আরও ৭৫ লাখ টাকা এবং ৫০ লাখ টাকার একটি ব্যাংক চেক প্রদান করেন।
অভিযান ও গ্রেফতার
প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে মিজানুর রহমান আদাবর থানায় মামলা দায়ের করেন। এর ভিত্তিতে পুলিশ শুক্রবার (২১ মার্চ ২০২৫) দিবাগত রাত থেকে সকাল পর্যন্ত আদাবরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃতরা একটি আন্তঃজেলা প্রতারক চক্রের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে অ্যান্টিক কয়েন ব্যবসার নামে প্রতারণা করে আসছে। চক্রটির আরও কয়েকজন সদস্য রয়েছে, যাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে এবং নতুন করে দায়ের করা মামলার তদন্ত চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, চক্রটির অন্যান্য সদস্যদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অনলাইন ডেক্স 
























