ঢাকা ০৬:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ২৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দরিদ্রদের টাকা আত্মসাৎ: এমডিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা অনুমোদন

  • অনলাইন ডেক্স
  • আপলোড সময় : ০৩:৫১:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
  • ২০৯ Time View

খুলনার আড়ংঘাটা বাজারে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসি’র ‘মুনমানহা’ নামের এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় গ্রাহকদের প্রায় ৯৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে ব্যাংকটির **ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)**সহ নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন,

> “খুলনায় দুদকের গণশুনানিতে অভিযোগটি পাওয়ার পর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে অনুসন্ধান করা হয়। যাদের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে, তারা সবাই নিতান্তই দরিদ্র ও প্রান্তিক শ্রেণির মানুষ।”

 

দুদক সূত্রে জানা গেছে, আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—
ব্যাংকটির বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কাশেম মো. শিরিন,
ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন) মো. সাহাদাৎ হোসেন,
এজেন্ট ব্যাংকিং ডিভিশনের প্রধান আহাম্মেদ আসলাম আল ফেরদৌস,
ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন কমপ্লায়েন্স ডিভিশনের প্রধান মো. ফরহাদ মাহমুদ,
সাবেক রিজিওনাল হেড এইচ. এম. কামরুজ্জামান,
সাবেক এরিয়া ম্যানেজার মো. আশরাফুল ইসলাম,
এজেন্ট শাখার প্রোপাইটর এস এম সোহেল মাহমুদ,
টেলার মো. আব্দুল হান্নান,
এবং আউটলেট রিলেশনশিপ অফিসার পলি খাতুন।

দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৮ সালে অনুমোদন পাওয়া এই শাখায় দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী নিয়মিত ব্যাংকিং সেবা নিতেন। কিন্তু এজেন্ট পরিচালনাকারী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে জমার রসিদ দিলেও তা ব্যাংকে জমা করতেন না।
তদন্তে প্রমাণ মেলে—৯৪ লাখ ৯৭ হাজার ৫৬৬ টাকা আত্মসাৎ করে তারা শাখা বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যান।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৫০ জন গ্রাহক ম্যানুয়াল ভাউচার ও নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ১ কোটি ১৭ লাখ টাকারও বেশি জমা করেছিলেন; এর মধ্যে কেবল ২২ লাখ টাকা উত্তোলন করা সম্ভব হয়েছে, বাকি অর্থ আত্মসাৎ করা হয়।

দুদক বলছে, ব্যাংকের নীতিমালা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইন অনুযায়ী এজেন্ট কর্তৃক অনিয়ম হলে গ্রাহকের অর্থ ফেরতের দায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষের।
কিন্তু এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থ ফেরত দেয়নি ডাচ্-বাংলা ব্যাংক।

মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০ ও ১০৯ ধারা অনুযায়ী অভিযোগ আনা হচ্ছে।

এ বিষয়ে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও এমডি আবুল কাশেম মো. শিরিনের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন
Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ

দরিদ্রদের টাকা আত্মসাৎ: এমডিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা অনুমোদন

আপলোড সময় : ০৩:৫১:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫

খুলনার আড়ংঘাটা বাজারে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসি’র ‘মুনমানহা’ নামের এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় গ্রাহকদের প্রায় ৯৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে ব্যাংকটির **ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)**সহ নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন,

> “খুলনায় দুদকের গণশুনানিতে অভিযোগটি পাওয়ার পর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে অনুসন্ধান করা হয়। যাদের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে, তারা সবাই নিতান্তই দরিদ্র ও প্রান্তিক শ্রেণির মানুষ।”

 

দুদক সূত্রে জানা গেছে, আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—
ব্যাংকটির বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কাশেম মো. শিরিন,
ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন) মো. সাহাদাৎ হোসেন,
এজেন্ট ব্যাংকিং ডিভিশনের প্রধান আহাম্মেদ আসলাম আল ফেরদৌস,
ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন কমপ্লায়েন্স ডিভিশনের প্রধান মো. ফরহাদ মাহমুদ,
সাবেক রিজিওনাল হেড এইচ. এম. কামরুজ্জামান,
সাবেক এরিয়া ম্যানেজার মো. আশরাফুল ইসলাম,
এজেন্ট শাখার প্রোপাইটর এস এম সোহেল মাহমুদ,
টেলার মো. আব্দুল হান্নান,
এবং আউটলেট রিলেশনশিপ অফিসার পলি খাতুন।

দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৮ সালে অনুমোদন পাওয়া এই শাখায় দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী নিয়মিত ব্যাংকিং সেবা নিতেন। কিন্তু এজেন্ট পরিচালনাকারী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে জমার রসিদ দিলেও তা ব্যাংকে জমা করতেন না।
তদন্তে প্রমাণ মেলে—৯৪ লাখ ৯৭ হাজার ৫৬৬ টাকা আত্মসাৎ করে তারা শাখা বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যান।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৫০ জন গ্রাহক ম্যানুয়াল ভাউচার ও নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ১ কোটি ১৭ লাখ টাকারও বেশি জমা করেছিলেন; এর মধ্যে কেবল ২২ লাখ টাকা উত্তোলন করা সম্ভব হয়েছে, বাকি অর্থ আত্মসাৎ করা হয়।

দুদক বলছে, ব্যাংকের নীতিমালা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইন অনুযায়ী এজেন্ট কর্তৃক অনিয়ম হলে গ্রাহকের অর্থ ফেরতের দায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষের।
কিন্তু এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থ ফেরত দেয়নি ডাচ্-বাংলা ব্যাংক।

মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০ ও ১০৯ ধারা অনুযায়ী অভিযোগ আনা হচ্ছে।

এ বিষয়ে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও এমডি আবুল কাশেম মো. শিরিনের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন