ঢাকা ০৫:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কেন শাপলাই চায়, ব্যাখ্যা দিল এনসিপি

  • অনলাইন ডেক্স
  • আপলোড সময় : ০৮:২৯:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫
  • ২২১ Time View

দলীয় প্রতীক হিসেবে কেন ‘শাপলা’ চাওয়া হচ্ছে, তার একটি ব্যাখ্যা হাজির করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি—এনসিপি।
শুক্রবার দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নামে প্রকাশ হওয়া প্রায় ১৩০০ শব্দের ব্যাখ্যাটি নিজেদের ফেইসবুক পেইজে শেয়ার করছেন এনসিপির একাধিক নেতা।
মুখ্য সংগঠক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীবের ফেইসবুকে ওই পোস্ট দেখা গেছে।

ব্যাখ্যায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশের পর থেকে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দলটির নেতাদের সময়ে সময়ে বৈঠক ও যোগাযোগের সূত্র তুলে ধরা হয়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “নির্বাচন কমিশনের তালিকায় প্রতীক যুক্ত করতে কমিশন একটি কমিটি গঠন করে এবং সংশ্লিষ্ট কমিটি মোট ১৫০টি প্রতীক অন্তর্ভুক্ত করার জন্য চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তুত করে। কমিটির একজন সদস্যের সঙ্গে এনসিপির একটি প্রতিনিধি দল গত ৪ জুন নির্বাচন কমিশনে বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি চূড়ান্ত তালিকায় ‘শাপলা’ প্রতীক থাকার বিষয়টি আশ্বস্ত করেন।”
ব্যাখ্যায় বলা হয়, গত ২২ জুন এনসিপি রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের আবেদন করে এবং ‘শাপলা’ প্রতীক সংরক্ষণের আবেদন জানায়।

দেশের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মাঝে ‘শাপলা’ এনসিপির সুপরিচিত প্রতীক হয়ে উঠেছে দাবি করে নাহিদ বলেন, “অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, হঠাৎ করে গত ৯ জুলাই গণমাধ্যমের খবরে এনসিপি জানতে পারে যে, নির্বাচন কমিশন শাপলাকে নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে তফসিলভুক্ত না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ‘শাপলা’ জাতীয় প্রতীক হওয়ায় নির্বাচনের প্রতীক হিসেবে এটি বিধিমালার তফসিলভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানায় নির্বাচন কমিশন।”
গত ১৩ জুলাই এনসিপির একটি প্রতিনিধিদল প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনারদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে বৈঠক করে। বৈঠকের আলোচনায় এবং পরে একটি লিখিত আবেদনে এনসিপি জানায়, “শাপলাকে জাতীয় প্রতীক উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনের প্রদত্ত ব্যাখ্যা আইনানুগভাবে সঠিক নয় এবং এই বিষয়ে কমিশনের গৃহীত অবস্থানের আইনি ভিত্তি নেই।”
এনসিপির যুক্তি

>> সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪(৩), জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা ও প্রতীক আদেশ ১৯৭২ এর ধারা ৪, বাংলাদেশ জাতীয় প্রতীক বিধিমালা ১৯৭২ এর বিধি ৩ এবং অন্যান্য আইন অনুসারে ‘শাপলা’ প্রতীক তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করা এবং রাজনৈতিক দলকে বরাদ্দ দিতে কোনো আইনি বাধা নেই।
>> ১৯৭২ সালের আদেশের ৩য় তফসিল এবং ১৯৭২ সালের বিধিমালার পরিশিষ্ট ক তে জাতীয় প্রতীকের নকশা অংকিত আছে। নকশা অনুযায়ী জাতীয় প্রতীক হচ্ছে লালচে এবং হলুদ রঙের যুগল বৃত্তের ভেতরে লালচে এবং হলুদ রঙে অংকিত পানির ওপর ভাসমান শাপলা ফুল, দুপাশে দুটি ধানের শীষ, উপরে তিনটি সংযুক্ত পাট পাতা, যার ঠিক দুই পাশে দুটি করে চারটি তারকার সন্নিবেশ ও সামষ্টিক রূপ।
>> অর্থাৎ জাতীয় প্রতীকের নকশা এবং রঙ ১৯৭২ সালের অর্ডারের ৩য় তফসিল ও বিধিমালার পরিশিষ্ট ক দ্বারা সুনির্দিষ্ট। তাছাড়া জাতীয় প্রতীকের শাপলাটি পানিতে ভাসমান, কিন্তু ‘ভাসমান শাপলা’ নামে কোনো প্রতীক তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করার আয়োজন ছিল না।
>> শাপলা জাতীয় প্রতীকের চারটি স্বতন্ত্র উপাদানের একটি মাত্র উপাদান। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে বিএনপিকে জাতীয় প্রতীকের চারটি উপাদানের একটি উপাদান ‘ধানের শীষ’ বরাদ্দ দিয়েছে এবং বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডিকে আরেকটি উপাদান ‘তারা’ প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দিয়েছে। সেহেতু নির্বাচন কমিশন ‘শাপলাকে’ প্রতীকের তালিকাভুক্ত করে রাজনৈতিক দলকে বরাদ্দ দিতে পারে।
>> নির্বাচন কমিশন জাতীয় ফল ‘কাঁঠালকে’ ইতোমধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দিয়েছে এবং তৃণমূল বিএনপি নামের আরেকটি দলকে ‘সোনালী আঁশ’ প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছে। সুতরাং ‘শাপলা’ জাতীয় ফুল হলেও দলের প্রতীক হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে আইনি বাধা নেই।
>> ধানের শীষ, শাপলা, পাটপাতা এবং তারকা আলাদা আলাদা করে চারটি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়। আর এই চারের সমষ্টিই হচ্ছে জাতীয় প্রতীক।
>> জাতীয় প্রতীকের উপাদানের মধ্যে দুটি উপাদান ইতোমধ্যে দুটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতীক হিসেবে বরাদ্দকৃত। সর্বোপরি, ‘শাপলাকে’ প্রতীকের তালিকায় না রাখার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের নীতিগত সিদ্ধান্ত ভুল আইনি ভিত্তি ও বোঝাপড়ার ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
>> গত ১৩ জুলাই আবেদনের অগ্রগতি জানতে চাইলেও কমিশন উক্ত কোনো ব্যাখ্যা ও অবস্থান স্পষ্ট করে নি। ১৩ জুলাইয়ের বৈঠকের পরবর্তী কোনো বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে শাপলা প্রতীক বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে কোনো ধরনর আইনি বাধার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
>> অর্থাৎ শাপলাকে প্রতীক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত না করার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত কোনো আইনি ভিত্তি দ্বারা গঠিত হয়নি। বরং এনসিপির প্রতি বিরূপ মনোভাব ও স্বেচ্ছাচারী দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ বলে প্রতীয়মান হয়।
নাহিদ বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার গত ৩ আগস্টের এক বৈঠকে ডিজিএফআইসহ কিছু সংস্থার লোগোতে শাপলা থাকার যুক্তিতে তা প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ না দেওয়ার কথা বলেন।
ওই বৈঠকের বরাত দিয়ে নাহিদ লেখেন, পুলিশের লোগোর উল্লেখযোগ্য অংশজুড়ে ধানের শীষ প্রতীক থাকা, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর লোগোর উল্লেখযোগ্য অংশজুড়ে ঈগল প্রতীক থাকা এবং মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের লোগোর পুরোটা অংশ জুড়ে দাড়িপাল্লা প্রতীক থাকা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন আগেই এসব প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছিল।
“বিএনপিকে প্রতীক হিসাবে ধানের শীষ, এবি পার্টিকে প্রতীক হিসাবে ঈগল এবং জামায়াতকে প্রতীক হিসাবে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু শুধুমাত্র ডিজিএফআইয়ের লোগোর সঙ্গে কিছুটা সাদৃশ্য থাকার কারণ দেখিয়ে এনসিপিকে শাপলা প্রতীক বরাদ্দ না দেওয়া বৈষম্যমূলক এবং স্বেচ্ছাচারী। নির্বাচন কমিশনের এ ধরনের মনোভাব প্রকাশের ফলে তাদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয় এবং স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রীয় কোনো বাহিনীর কাছে নতি স্বীকার করছে কিনা এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে এবং তাদের কারো কারো কথায় প্রভাবিত হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্ন জনমনে তৈরি হয়।”

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন
Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ

কেন শাপলাই চায়, ব্যাখ্যা দিল এনসিপি

আপলোড সময় : ০৮:২৯:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫

দলীয় প্রতীক হিসেবে কেন ‘শাপলা’ চাওয়া হচ্ছে, তার একটি ব্যাখ্যা হাজির করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি—এনসিপি।
শুক্রবার দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নামে প্রকাশ হওয়া প্রায় ১৩০০ শব্দের ব্যাখ্যাটি নিজেদের ফেইসবুক পেইজে শেয়ার করছেন এনসিপির একাধিক নেতা।
মুখ্য সংগঠক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীবের ফেইসবুকে ওই পোস্ট দেখা গেছে।

ব্যাখ্যায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশের পর থেকে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দলটির নেতাদের সময়ে সময়ে বৈঠক ও যোগাযোগের সূত্র তুলে ধরা হয়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “নির্বাচন কমিশনের তালিকায় প্রতীক যুক্ত করতে কমিশন একটি কমিটি গঠন করে এবং সংশ্লিষ্ট কমিটি মোট ১৫০টি প্রতীক অন্তর্ভুক্ত করার জন্য চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তুত করে। কমিটির একজন সদস্যের সঙ্গে এনসিপির একটি প্রতিনিধি দল গত ৪ জুন নির্বাচন কমিশনে বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি চূড়ান্ত তালিকায় ‘শাপলা’ প্রতীক থাকার বিষয়টি আশ্বস্ত করেন।”
ব্যাখ্যায় বলা হয়, গত ২২ জুন এনসিপি রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের আবেদন করে এবং ‘শাপলা’ প্রতীক সংরক্ষণের আবেদন জানায়।

দেশের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মাঝে ‘শাপলা’ এনসিপির সুপরিচিত প্রতীক হয়ে উঠেছে দাবি করে নাহিদ বলেন, “অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, হঠাৎ করে গত ৯ জুলাই গণমাধ্যমের খবরে এনসিপি জানতে পারে যে, নির্বাচন কমিশন শাপলাকে নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে তফসিলভুক্ত না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ‘শাপলা’ জাতীয় প্রতীক হওয়ায় নির্বাচনের প্রতীক হিসেবে এটি বিধিমালার তফসিলভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানায় নির্বাচন কমিশন।”
গত ১৩ জুলাই এনসিপির একটি প্রতিনিধিদল প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনারদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে বৈঠক করে। বৈঠকের আলোচনায় এবং পরে একটি লিখিত আবেদনে এনসিপি জানায়, “শাপলাকে জাতীয় প্রতীক উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনের প্রদত্ত ব্যাখ্যা আইনানুগভাবে সঠিক নয় এবং এই বিষয়ে কমিশনের গৃহীত অবস্থানের আইনি ভিত্তি নেই।”
এনসিপির যুক্তি

>> সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪(৩), জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা ও প্রতীক আদেশ ১৯৭২ এর ধারা ৪, বাংলাদেশ জাতীয় প্রতীক বিধিমালা ১৯৭২ এর বিধি ৩ এবং অন্যান্য আইন অনুসারে ‘শাপলা’ প্রতীক তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করা এবং রাজনৈতিক দলকে বরাদ্দ দিতে কোনো আইনি বাধা নেই।
>> ১৯৭২ সালের আদেশের ৩য় তফসিল এবং ১৯৭২ সালের বিধিমালার পরিশিষ্ট ক তে জাতীয় প্রতীকের নকশা অংকিত আছে। নকশা অনুযায়ী জাতীয় প্রতীক হচ্ছে লালচে এবং হলুদ রঙের যুগল বৃত্তের ভেতরে লালচে এবং হলুদ রঙে অংকিত পানির ওপর ভাসমান শাপলা ফুল, দুপাশে দুটি ধানের শীষ, উপরে তিনটি সংযুক্ত পাট পাতা, যার ঠিক দুই পাশে দুটি করে চারটি তারকার সন্নিবেশ ও সামষ্টিক রূপ।
>> অর্থাৎ জাতীয় প্রতীকের নকশা এবং রঙ ১৯৭২ সালের অর্ডারের ৩য় তফসিল ও বিধিমালার পরিশিষ্ট ক দ্বারা সুনির্দিষ্ট। তাছাড়া জাতীয় প্রতীকের শাপলাটি পানিতে ভাসমান, কিন্তু ‘ভাসমান শাপলা’ নামে কোনো প্রতীক তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করার আয়োজন ছিল না।
>> শাপলা জাতীয় প্রতীকের চারটি স্বতন্ত্র উপাদানের একটি মাত্র উপাদান। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে বিএনপিকে জাতীয় প্রতীকের চারটি উপাদানের একটি উপাদান ‘ধানের শীষ’ বরাদ্দ দিয়েছে এবং বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডিকে আরেকটি উপাদান ‘তারা’ প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দিয়েছে। সেহেতু নির্বাচন কমিশন ‘শাপলাকে’ প্রতীকের তালিকাভুক্ত করে রাজনৈতিক দলকে বরাদ্দ দিতে পারে।
>> নির্বাচন কমিশন জাতীয় ফল ‘কাঁঠালকে’ ইতোমধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দিয়েছে এবং তৃণমূল বিএনপি নামের আরেকটি দলকে ‘সোনালী আঁশ’ প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছে। সুতরাং ‘শাপলা’ জাতীয় ফুল হলেও দলের প্রতীক হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে আইনি বাধা নেই।
>> ধানের শীষ, শাপলা, পাটপাতা এবং তারকা আলাদা আলাদা করে চারটি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়। আর এই চারের সমষ্টিই হচ্ছে জাতীয় প্রতীক।
>> জাতীয় প্রতীকের উপাদানের মধ্যে দুটি উপাদান ইতোমধ্যে দুটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতীক হিসেবে বরাদ্দকৃত। সর্বোপরি, ‘শাপলাকে’ প্রতীকের তালিকায় না রাখার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের নীতিগত সিদ্ধান্ত ভুল আইনি ভিত্তি ও বোঝাপড়ার ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
>> গত ১৩ জুলাই আবেদনের অগ্রগতি জানতে চাইলেও কমিশন উক্ত কোনো ব্যাখ্যা ও অবস্থান স্পষ্ট করে নি। ১৩ জুলাইয়ের বৈঠকের পরবর্তী কোনো বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে শাপলা প্রতীক বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে কোনো ধরনর আইনি বাধার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
>> অর্থাৎ শাপলাকে প্রতীক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত না করার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত কোনো আইনি ভিত্তি দ্বারা গঠিত হয়নি। বরং এনসিপির প্রতি বিরূপ মনোভাব ও স্বেচ্ছাচারী দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ বলে প্রতীয়মান হয়।
নাহিদ বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার গত ৩ আগস্টের এক বৈঠকে ডিজিএফআইসহ কিছু সংস্থার লোগোতে শাপলা থাকার যুক্তিতে তা প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ না দেওয়ার কথা বলেন।
ওই বৈঠকের বরাত দিয়ে নাহিদ লেখেন, পুলিশের লোগোর উল্লেখযোগ্য অংশজুড়ে ধানের শীষ প্রতীক থাকা, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর লোগোর উল্লেখযোগ্য অংশজুড়ে ঈগল প্রতীক থাকা এবং মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের লোগোর পুরোটা অংশ জুড়ে দাড়িপাল্লা প্রতীক থাকা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন আগেই এসব প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছিল।
“বিএনপিকে প্রতীক হিসাবে ধানের শীষ, এবি পার্টিকে প্রতীক হিসাবে ঈগল এবং জামায়াতকে প্রতীক হিসাবে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু শুধুমাত্র ডিজিএফআইয়ের লোগোর সঙ্গে কিছুটা সাদৃশ্য থাকার কারণ দেখিয়ে এনসিপিকে শাপলা প্রতীক বরাদ্দ না দেওয়া বৈষম্যমূলক এবং স্বেচ্ছাচারী। নির্বাচন কমিশনের এ ধরনের মনোভাব প্রকাশের ফলে তাদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয় এবং স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রীয় কোনো বাহিনীর কাছে নতি স্বীকার করছে কিনা এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে এবং তাদের কারো কারো কথায় প্রভাবিত হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্ন জনমনে তৈরি হয়।”

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন